কুয়েত দেশটি আমাদের সবার কাছে অন্যতম আকর্ষণের, কেননা অন্যান্য দেশের টাকার মানের তুলনায় এদেশের টাকার মান অনেক বেশি। এছাড়াও কুয়েতের অনেক শ্রমিক চাহিদা থাকে। তাই এশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে মানুষ কুয়েতে যাবার জন্য আগ্রহী হয়। আজকে আমাদের এই কনটেন্টের মাধ্যমে আমরা কুয়েতে কাজ সম্পর্কে বোঝানোর চেষ্টা করব।
আজকে আমাদের এই কনটেন্টের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন কুয়েতে কোন কাজগুলো সব থেকে বেশি চাহিদা রয়েছে, ফলে আপনি সহজেই সে সকল কাজের জন্য ভিসা আবেদন করতে পারবেন। খুব সহজে জানতে পারবেন কুয়েতে কোন কাজের বেতন কেমন হয়, কুয়েতে কোন কাজগুলো সব থেকে বেশি পরিমাণে হয় এবং কুয়েতে ইলেকট্রিক্যাল কাজের চাহিদা কেমন রয়েছে।
আপনি যদি আপনার স্বপ্নের দেশ হিসেবে কুয়েতকে সিলেক্ট করে থাকেন তাহলে এ কনটেন্টে আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণে কনটেন্ট এর মাধ্যমে আপনি কুয়েতে সম্পর্কে জানা অজানা অনেক তথ্য জানতে পারবেন। তাই কোন জায়গায় না টেনের সম্পূর্ণ কনটেন্টই মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি
কুয়েতে মূলত সব ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে। তবে বিশেষভাবে ক্লিনার, কনস্ট্রাকশন এবং ড্রাইভিং কাজের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও কুয়েতের কোম্পানিতে অনেক ভালো ভালো কাজের সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া কুয়েতে হোটেল রেস্টুরেন্ট এবং ইলেকট্রনিক কাজের ব্যাপক চাহিদা আছে।
কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় কুয়েতের সব ধরনের কাজের চাহিদাই রয়েছে। তবে আপনি বিশেষভাবে কোন কাজে দক্ষ সেটা হবে আপনার চাহিদার কাজ। আপনি যদি কোন কাজে বিশেষভাবে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে সেই কাজের উপর আপনার বেশি ফোকাস দিতে হবে।
এক কথায় বলা যায় আপনি যদি কোন কাজে বিশেষভাবে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কুয়েতে আপনি কাজ পাবেন। কারণ ছোট বড় কুয়েতে সব কাজের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই দেশ থেকে কোন ট্রেনিং সেন্টার কিন্তু প্রশিক্ষণ নেওয়াটা জরুরী। এছাড়াও যদি ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে তো অনেক ভালো হয়।
কুয়েত মসজিদ ক্লিনার ভিসা
ধর্মের দিক থেকে কয়েকটি ইসলামিক রাষ্ট্র। এখানে প্রচুর পরিমাণে মসজিদ রয়েছে। মসজিদ গুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য বেশ কিছু মানুষের প্রয়োজন হয়। যার কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে মসজিদ পরিষ্কার করার জন্য শ্রমিক নেওয়া হয়। কুয়েতে মসজিদ ক্লিনার ভিসার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
কুয়েতে যতগুলো কাজ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে মসজিদ ক্লিনার কাজটি অত্যন্ত সুন্দর এবং নিরবিচ্ছিন্ন। যে সকল মানুষ একটু ধর্মমনস্ক তাদের জন্য এ কাজটি অনেক সুন্দর। কারণ তাদের প্রধান কাজ হল একটি মসজিদকে সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা। মসজিদ সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে রাখতে পারলে অনেক সময় বকশিশ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়া আফগানিস্তান থেকে বহু মানুষ কুয়েতে মসজিদ ক্লিনার হিসেবে যায়।
কুয়েত ক্লিনার এর বেতন কত
কুয়েতে ক্লিনারের বেতন ৩০ হাজার থেকে ৫০ টাকা হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে এর থেকে কম বেতন হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে কুয়েতে ক্লিনার বেতন নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়াও একজন ক্লিনার প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কর্ম ঘন্টার থেকে বেশি কর্ম ঘন্টা কাজ করে ওভারটাইম ইনকাম করতে পারেন। তবে কুয়েতে অনেক বেশি ক্লিনার হওয়ার কারণে ওভার টাইম কাজ পাওয়াটা একটু কঠিন। তবে ব্যবহারের মধ্যে যদি শালীনতা থাকে তাহলে অবশ্যই ওভারটাইম কাজ পাওয়া যায়। এছাড়াও কুয়েতে গিয়ে যদি ভাষার ব্যবহার জানতে পারেন তাহলে ক্লিনার কাজ করেও অনেক বেশি টাকা ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে।
কুয়েত হোটেল ভিসায় কাজ
আপনি যদি কোন কাজে বিশেষভাবে দক্ষ না হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কুয়েতে গিয়ে হোটেলের কাজ করতে পারেন। হোটেলের কাজে বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। কুয়েতে হোটেল ভিসায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
তবে কুয়েতে হোটেল ভিসা পাওয়ার আগে কিছু প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। কুয়েত হোটেল ভিসা কার্যক্রম শুরু হলে আপনি দেশের কোন ট্রেনিং সেন্টার থেকে সাধারণ ট্রেনিং করে কুয়েতে গিয়ে হোটেলের কাজ করতে পারবেন। যারা বিশেষ কোনো কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে না তারা হতে গিয়ে হোটেল , রেস্টুরেন্ট, শপিংমল এসব জায়গায় কাজ করে।
কুয়েতে যে কাজগুলোর চাহিদা বেশি তার লিস্ট
ড্রাইভিং |
কন্সট্রাকশন |
শ্রমিক |
সেফ |
মসজিদ ক্লিনার |
garden |
হোটেল |
মেকারনিকাল |
নাপিত |
রেস্টুরেন্ট |
ডেলিভারি ম্যান |
টেকনিশিয়ান |
ক্লিনার |
আইটি সেক্টর |
সাবান কিপার |
কুয়েত ইলেকট্রিক্যাল কাজের চাহিদা
ইলেকট্রিক্যাল কাজের চাহিদা পুরো দেশব্যাপী রয়েছে। কুয়েত উন্নত বিশ্বের তালিকার সঙ্গে বেশ তাল মিলিয়ে চলছে। যার কারণে কুয়েতে ইলেকট্রনিক কাজের চাহিদা রয়েছে। তবে কুয়েতের ইলেকট্রনিক কাজের ভিসা নেওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই দেশ থেকে কমপক্ষে এক বছরের ট্রেনিং নিতে হবে। ইলেকট্রনিক কাজ অনেক রিস্ক রয়েছে।
এ কাজের জন্য অনেক দক্ষতার প্রয়োজন হয়। তাই দেশ থেকে নূন্যতম ১ বছরের ট্রেনিং নিয়ে তারপরে কুয়েত ইলেকট্রনিক কাজের জন্য যাওয়া উচিত। তবে ইলেকট্রনিক কাজের জন্য কুয়েতের চেয়ে মালয়েশিয়ায় বেশি চাহিদা রয়েছে। যদিও মালয়েশিয়ার চেয়ে কুয়েতে ইলেকট্রনিক কাজের বেতন বেশি।
কুয়েত কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ
কুয়েতে দেশটি ব্যাপকভাবে উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ব্যাপকভাবে উন্নতি হচ্ছে এবং প্রচুর পরিমাণে ভবন নির্মাণ হচ্ছে কুয়েতে। এসকল ভবন নির্মাণ করতে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। তাই বিভিন্ন দেশ থেকে কুয়েত কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকেও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবছর কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য কুয়েতে বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে অধিবাসন করে। কুয়েতে কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য ৬০ হাজার টাকার মতো বেতন পাওয়া যায়।
কুয়েতে বাসা বাড়িতে কাজের চাহিদা
কুয়েতের দৃষ্টিতে ক্লিনারের কাজ থাকলেও বাসা বাড়িতে তেমন কাজের চাহিদা নেই। তবে বাসার বাড়িতে ক্লিনারের কাজ রয়েছে ব্যাপক। তবে স্থায়ীভাবে বাসা বাড়িতে কাজ করার জন্য কুয়েতে তেমন চাহিদা নেই। বাসা বাড়িতে কাজ করার জন্য কুয়েত দিয়ে ২৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়। বাংলাদেশ থেকে বহু নারী কুয়েতে বাসা বাড়ি তে কাজ করার জন্য গিয়ে থাকে।
তবে বাসা বাড়িতে কাজ করার জন্য কুয়েতের চেয়ে সৌদি আরব অনেক বেশি ভালো। সৌদি আরবে বাসা বাড়িতে কাজ করার জন্য অনেক চাহিদা রয়েছে। যদিও সৌদি আরবে বাসার বাড়ির কর্মীদেরকে নির্যাতন করার বেশ কিছু প্রকাশিত হয়ে ছিল। তবে কুয়েতে বাসা বাড়িতে কাজ করতে চাইলে আপনাকে ক্লিনার হিসেবে কাজ করতে হবে।
কুয়েত কোম্পানি থেকে কাজের চাহিদা কেমন
কুয়েতের বেশিরভাগ কাজ কোম্পানি নির্ভর। মালিকানায় কাজ খুব কম রয়েছে। তাই কুয়েতে কাজ করতে গেলে অবশ্যই জীবনে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। কুয়েতে অনেক ধরনের কোম্পানি রয়েছে। কুয়েতে কোম্পানি ভিসা পেতে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ ছয় থেকে আট লক্ষ টাকা খরচ করা লাগবে।৬ থেকে ৮ খরচ করে আপনি ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাবেন
এক কথায় বলা যায় কুয়েতে কোম্পানি কাজের চাহিদা প্রচুর। কোম্পানির মাধ্যমে চুক্তি ছাড়া আপনি কাজ তেমন পাবেন না। তা আপনি যে কাজের জন্যই কুয়েতে যান না কেন অবশ্যই যে কোন একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিচিত মানুষ না থাকলে দালালদের মাধ্যমে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হয়। যদিও সরকারি মাধ্যমেও কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
কুয়েত কোম্পানিতে সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে বিভিন্ন রকম সার্কুলার দেয়। সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করে কোম্পানি ভিসা নিতে হয়। তবে অবশ্যই দেশীয় বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টার থেকে ট্রেনিং করে এরপর কুয়েতে আসতে হয়।
কুয়েত ওয়েল্ডিং কাজের চাহিদা
কুয়েতে প্রচুর পরিমাণে নির্মাণ কাজ চলছে। এমতাবস্থায় কুয়েতে যেমন ইলেকট্রনিক এবং কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য লোক নেয় ঠিক তেমনি কুয়েতে ওয়েল্ডিং কাজেরও ব্যাপক চাহিনা রয়েছে। কুয়েতে ওয়েল্ডিং কাজ করে আপনি প্রতি মাসে ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তবে কুয়েতে ওয়েল্ডিং কাজ করার জন্য আপনাকে কিছু স্কিল ডেভলপ করতে হবে। কুয়েতে ওয়েল্ডিং কাজের ভিসা পেতে হলে আপনাকে পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে। ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ করে যে কোন মানুষ পেতে ওয়েল্ডিং কাজের ভিসা পেতে পারে।
কুয়েত শেফ এর কাজের চাহিদ
কুয়েত একটি ইসলামিক রাষ্ট্র এবং এদেশের মূল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার চালিকা শক্তি হলো তেল। তেল রপ্তানি করে এই দেশটি উন্নতির শীর্ষে চলে এসেছে। দেশটিতে রান্নাবান্না করার জন্য সেফ এর কাজের জন্য বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ ভারত শ্রীলংকা থেকে বহু মানুষ কুয়েতে শেফ হিসেবে কাজের জন্য যায়।
তবে কুয়েতে শেফ এর কাজের জন্য যেতে হলে আপনা কে অবশ্যই হাতের রান্না শিখতে হবে। শুধু হাতের রান্না শিখলে হবে না আপনার হাতের রান্না অনেক সুন্দর হতে হবে। কুয়েতের শেষের কাজের জন্য আপনাকে কুয়েতে যে সকল খাবার বেশি পরিচিত সেগুলো রান্না করা শিখতে হবে।
কারণ তাদের খাবারের স্বাদ এবং তাদের খাবারের আইটেম সম্পূর্ণ আলাদা। তাই সেখানে কাজ করতে গেলে অবশ্যই আপনি সেখানকার পরিবেশের খাবারের পরিচিতি সম্পর্কে জানতে হবে। এক্ষেত্রে কুয়েতে শেফ এর কাজটা করা একটু কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও সেখানে কিছু দিন থাকার পর সবকিছু নিজের কন্ট্রোলে চলে আসে।