কুয়েতে প্রতিবছর হাজারো শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে কুয়েতে পাড়ি জমাই। তবে কোন শ্রমিকের কত বছর বয়সে কুয়েত যেতে পারবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। আজকে আমরা আমাদের এই কন্টেন্টের মাধ্যমে সেই সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকে আমাদের এই মাধ্যমে আপনি পরিষ্কারভাবে জানতে পারবেন কুয়েতে কোন ভিসা যেতে কত বছর বয়স লাগে। তাহলে আসুন আমরা কুয়েতে যেতে কত বছর বয়স লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানি,
কুয়েত যেতে কত বছর বয়স লাগে
কুয়েতে যেতে কত বছর লাগে এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় কুয়েতে যেতে সর্বনিম্ন বয়স লাগে ১৮ বছর। তবে ভিসার কাঠামোর ওপর নির্ভর করে কুয়েতে যাবার বয়স। কুয়েতের নানান রকম ভিসা আছে নানান রকম ভিসার জন্য আলাদা আলাদা বয়স নির্ধারণ করা হয়।
কুয়েতের শ্রমবাজারের একটি বিরাট অংশ রয়েছে বাংলাদেশীদের। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে মানুষ কুয়েতে কাজ করতে যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকেও কুয়েত দেখতে অপরূপ। যার কারণে প্রতিবছর এশিয়া থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে টুরিস্ট ভিসায় যায়। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য কুয়েত একটি অন্যরকম দেশ।
এছাড়াও ব্যবসার কাজের জন্য কুয়েত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পৃথিবীতে যে দেশগুলো সব থেকে বেশি তেল উৎপাদন করে তার মধ্যে কুয়েত অন্যতম। তাই ব্যবসায়ীদের জন্য যাওয়া-আসা নিত্যদিনের ঘটনা। যদিও ব্যবসায়িক কাজের ক্ষেত্রে এশিয়ার থেকে মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলো থেকেই বেশি মানুষ কুয়েত গিয়ে থাকেন।
কুয়েত কাজের ভিসাতে যেতে কত বয়স লাগে
কুয়েতে কাজের ভাষাতে যেতে সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছর বয়স লাগে। এর থেকে কম বা বেশি বয়সের মানুষকে কুয়েতে কাজের ভিসার জন্য নেওয়া হয় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে ২১ বছর থেকে ৪০ বছরের মানুষদের গ্রহণযোগ্য বেশি দেওয়া হয়। তাছাড়াও কোম্পানির নির্ধারিত বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে সাধারণত বিভিন্ন কোম্পানিতে ২১ বছরের পর থেকেই কাজে আবেদন করার সুযোগ থাকে।
কুয়েতে নানান ধরনের কাজ রয়েছে সব কাজের জন্য একরকম বয়স সীমার প্রয়োজন হয় না। কিছু কাজ রয়েছে যেগুলোতে একটু বেশি বয়স হলেও কোন সমস্যা হয় না কিন্তু সে কাজগুলো অল্প বয়স একেবারেই করতে পারে না। তাই সেই কাজগুলোতে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ বছর বয়স কর্মীদের নেওয়া হয়। তাই বলা যায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজের জন্য বিভিন্ন রকম বয়স নির্ধারণ করা হয়। তবে অবশ্যই ১৮ বছরের নিচে কোন কর্মীকে কাজের জন্য নেওয়া হয় না কুয়েতে। এবং অতিরিক্ত কোন বয়সের কর্মীকে ঐ কুয়েতে কাজের জন্য ভিসা দেওয়া হয় না।
সরকারিভাবে কুয়েত যেতে কত বয়স লাগে
কুয়েতে সরকারিভাবে যেতে সর্বনিম্ন বয়স লাগে ২১ বছর। ২১ বছরের কম হলে সরকারি ভাবে কুয়েতে যাওয়ার ভিসা আবেদন করা যায় না। তাই অবশ্যই সরকারিভাবে কুয়েত ভিসা পেতে হলে ২১ বছর বয়স হতে হবে। তবে বিশেষ কিছু কাজের জন্য কোম্পানি কিন্তু বয়স নির্ধারণ করা থাকে। যে ধরনের বয়স নির্ধারণ থাকে সরকারিভাবে আবেদন করার জন্য ঠিক সেই বয়স ছাড়া আবেদন করা যায় না।
কুয়েতে সরকারিভাবে কোম্পানি কিন্তু অনেক রকম পোস্টে কাজের জন্য কর্মী নেই। তবে কর্মীদের বয়স নির্ধারণের ব্যাপারে বলা হয় যে, শারীরিক ফিটনেস ছাড়া কোন কর্মীকে যেন না পাঠানো হয়। বয়সের ব্যাপারটা যদিও কাছাকাছি থাকে শারীরিক ফিটনেস সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এরপরও যদি কুয়েতে কাজের জন্য সরকারিভাবে বয়সের দিক থেকে আপনি টিকে যান তাহলে কিন্তু কুয়েতে কাজের ভিসা পাবেন না। এরপর আপনাকে কুয়েতে কাজের ভিসার জন্য ট্রেনিং করতে হবে। ট্রেনিং এ গিয়ে যদি আপনি সবকিছুর পরীক্ষায় নাটিকে তাহলে আপনাকে কখনো ভিসা প্রদান করা হবে না। তাই অবশ্যই বয়সের পাশাপাশি শারীরিক ফিটনেস রাখতে হবে।
কুয়েত টুরিস্ট ভিসায় যেতে কত বয়স লাগে
কুয়েতে টুরিস্ট ভিসা আবেদন করার জন্য বয়স থাকতে হয় সর্বনিম্ন ২৭ বছর। ২৭ বছরের কোন নাগরিক কুয়েতের টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে। তবে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে একজন টুরিস্টের সাথে ছোট বাচ্চা অথবা তার কোন ছোট ভাই থাকতে পারে। তবে টুরিস্টের সাথে ছোট বাচ্চা অথবা ভাইকে নিতে হলে তাদের চাহিদা মত সকল রকমের প্রদান করতে হবে। টুরিস্ট ভিসায় যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখানোরও প্রয়োজন হবে।
কুয়েত স্টুডেন্ট ভিসা তে যেতে কত বয়স লাগে
কুয়েতে স্টুডেন্ট ভাষায় যেতে হলে আপনার বয়সের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগ্যতা। বয়স একটু কম বেশি হলেও যদি যোগ্যতা না থাকে তাহলে আপনি পাবেন না। কুয়েতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই সেখানকার যেকোনো একটি ইউনিভার্সিটিতে আপনাকে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হবে। এবং সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে আপনাকে সেই ইউনিভার্সিটি থেকে একটি মেইল অথবা লেটার এর মাধ্যমে ভর্তির জন্য জানিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে আপনি কুয়েতে স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন।
তবে বয়সের দিক থেকে কুয়েতের ইউনিভার্সিটি তে কোন শ্রেণীতে আপনি ভর্তি হতে যাচ্ছেন সেটার উপরে নির্ভর করবে আপনার মূল বয়স। এছাড়াও স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই আইএলটিএস কোর্স অনেক ভালো থাকতে হয়। অনেকেই মনে করে থাকেন স্টুডেন্ট ভিসা কি এই কুয়েতে ছোটখাটো কোন জব করবেন। এক্ষেত্রেও কুয়েত সরকার বেশ ভালো ধরনের সুযোগ রেখেছেন স্টুডেন্টদের জন্য। কুয়েতের স্টুডেন্টরা প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট ঘণ্টায় কাজ করতে পারবেন।
কুয়েত ড্রাইভিং ভিসাই যেতে কত বয়স লাগে
কুয়েতে ড্রাইভিং ভিসায় যেতে স্বাভাবিকভাবে ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে বয়স হতে হয়। তবে স্বাভাবিকভাবে ড্রাইভিং ভিসার জন্য বয়সের থেকে দক্ষতা টা অনেক বেশি জরুরী। কারণ কুয়েতে ড্রাইভিং করার জন্য অনেক বেশি পরিমাণে দক্ষ হওয়া প্রয়োজন। বয়স যদিও কমবেশি হয় তাতেও খুব একটা বেশি সমস্যা হয় না। তবে অবশ্যই আপনাকে ড্রাইভিং পেশায় সব থেকে বেশি দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যদি সব থেকে বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে কুয়েতে ড্রাইভিং ভিসায় অতিরিক্ত টাকা বেতন পাবেন।
কুয়েত যেতে কি কি লাগে
কুয়েতে যেতে গেলেন অন্যরকম ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। এ সকল ডকুমেন্টসগুলো আপনি এজেন্সি থেকে জেনে নিতে পারবেন। এছাড়াও যদি কুয়েতে কোন ধরনের ভিসা নিতে চাচ্ছেন সেটার উপরে আপনার ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে। আপনি নিজেই কোম্পানিতে কাজ করতে যাচ্ছেন সেই কোম্পানির রিক্রুটমেন্ট অনুযায়ী আপনাকে সমস্ত ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। তবে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে কোন ডকুমেন্টস এ নকল থাকা যাবে না। এছাড়াও অনলাইন থেকে যে ফর্মটি পূরণ করতে হয় সেটি একেবারে নির্ভুল হতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি এজেন্সির সহায়তা নিতে পারেন। এছাড়াও কুয়েতে যাওয়ার জন্য আপডেট কোন কিছু লাগলে তারা তাদের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করে। তাই কুয়েত বাংলাদেশ এজেন্সি ওয়েবসাইট থেকে আপনারা সবসময় আপডেট রাখতে পারেন।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বয়স কত লাগে
কুয়েতে কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার জন্য ১৯ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত বয়স লাগে। তবে কোন কোম্পানিতে যাচ্ছেন সেটার উপর নির্ভর করবে আপনার বয়স। কারণ বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের বয়সের কর্মী নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তাদের দেয়া সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। কিছু কিছু কোম্পানি অতিরিক্ত বয়সের কর্মী নেয় না, আবার অনেক কোম্পানি আছে যারা তরুণদেরকে বেশি পরিমাণে সুযোগ দেয়।
তাই কুয়েতে কোম্পানি ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে সেই কোম্পানি থেকে দেওয়া সার্কুলার অনুসরণ করতে হবে। সার্কুলার এ কোম্পানির জন্য যে বয়স নির্ধারণ করা থাকবে সে বয়সের কর্মী ছাড়া আবেদন করা যাবে না। তাই অবশ্যই কুয়েতে কোম্পানি ভিসা আবেদন করার জন্য সার্কুলার দেখে তারপর আবেদন করবেন। তা না হলে আপনার আবেদনটি আপনার অজান্তেই বাতিল হয়ে যাবে।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা যেতে কি লাগে
- কুয়েতে কোম্পানি ভিসা পাওয়ার জন্য প্রথমে একটি অনলাইন থেকে নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে হয়।(আবেদনটি অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে)
- একটি বৈধ পাসপোর্ট এর পাশাপাশি পাসপোর্ট এর মেয়াদ যেন কমপক্ষে এক বছর থাকে।
- আপনি কোন কোম্পানিতে চাকরি করতে যাচ্ছেন সেই কোম্পানির নাম এবং ঠিকানা উল্লেখ থাকতে হবে।
- আপনি কত বছরের মেয়াদের চাকরি করতে যাচ্ছেন তা জানাতে হবে
- পাসপোর্ট সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি প্রয়োজন হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
- এছাড়াও মেডিকেল রিপোর্টের কপি অনেক সময় কোম্পানি চেয়ে থাকে। তাই মেডিকেল রিপোর্ট আগে থেকেই করিয়ে রাখা ভালো।
কুয়েত যাওয়ার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন তা সবগুলো অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে তা না হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। এক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড এবং নিবন্ধন আইডি কার্ডের নাম ঠিকানা নির্ভুল হতে হবে পাশাপাশি প্রয়োজনে যে সমস্ত কাগজপত্র সত্যায়িত করার প্রয়োজন তা অবশ্যই সত্যায়িত সম্পন্ন করে তারপরেই আবেদনপত্রের সাথে এটাস্ট করে জমা দিতে হবে।