ডেঙ্গু বর্তমান সময়ে মশা বাহিত একটি সংক্রমিত রোগ। এডিস মশার কারণে বর্তমান সময়ে সবথেকে বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগ মূলত সংক্রমিত মশা কোন ব্যক্তিকে যদি কামড়ে দেয় তার মাধ্যমে ভাইরাস বহন করে এই ভাবেই ডেঙ্গু রোগে সংক্রমিত হতে থাকে।
২০২৩ সালে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হচ্ছে ডেঙ্গু। এদিকে দেশে দিন দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগের সংখ্যা বাড়তেই আছে এর তুলনায় মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনের সেন্টার এবং কন্ট্রোল রুমের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী জানানো হয় যে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২৩ সালে এটি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগেও জুলাই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে। এ নিয়ে ২০২৩ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুটে মোট ৯৬ জন রোগী মারা গিয়েছে। ডেঙ্গু হলে প্রয়োজন মত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সে সাথে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে তাহলে চলুন এগুলো সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জেনে নিই।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
- ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০৩ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বরের তাপমাত্রা হতে পারে।
- একটানা জ্বর গায়ে থাকতে পারে অথবা ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে আবার পুনরায় জ্বর আসতে পারে।
- জরের পাশাপাশি শরীর অনেক ব্যথা এবং মাথা ব্যথা চোখের পিছনে ব্যথা দেখা দিতে পারে।
- ডেঙ্গু হলে তুই মানবদেহে ব্যাপকভাবে পানি শূন্যতা তৈরি হয়।
- মানুষের শরীরে পাল সেট অনেক অংশে বেড়ে যায়।
- এবং রক্তচাপ একেবারেই কমে যাই
- রোগী অতিরিক্ত অস্থির হয়ে ওঠেন এবং খিচুনি ভাব আসতে পারে।
- শরীরে লালচে দাগ দেখা দিতে পারে।
- ডেঙ্গু হলে তীব্র পেট ব্যথা এবং পেট ফুলে যায়।
- রক্তভূমি হতে পারে এবং দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বের হয়।
- ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট কঠিন হয়ে যায় এবং দ্রুত শ্বাস নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
- শরীর ঠান্ডা অনুভব হয় এবং অতিরিক্ত ঘাম হয়।
- ঘুম ঘুম ভাব হয় খাবারের প্রতি অনীহা আসে।
আরো পড়ুন: মাথা ব্যাথা হলে যে ওষুধগুলো খাওয়া উচিত
ডেঙ্গু রোগ | রোগের লক্ষণ |
দিনের যেকোনো বেলায় হতে পারে | ঘন ঘন জ্বর আসা |
আক্রান্তের স্থান | সমস্ত শরীর ব্যথা হয়ে যাওয়া |
ডেঙ্গু রোগের ওষুধ | প্যারাসিটামল |
ডেঙ্গু হলে | ডাক্তারের পরামর্শ নিন |
ডেঙ্গুর স্থায়িত্ব | ৩ থেকে ৭ দিন |
ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে ওষুধ হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল খেতে হবে। অনেকেই না জেনে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা হওয়ার কারণে ব্যথা নাশক ওষুধ সেবন করে থাকেন। এক্ষেত্রে কিন্তু বিপদজনক ঘটনা ঘটতে পারে তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডেঙ্গুর জন্য ওষুধ খাইতে হবে। কারণ ব্যথা নাশক ওষুধ শরীরের রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে যা মৃত্যু পর্যন্ত বয়ে আনতে পারে।
ডেঙ্গু হলে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন, ভাতের মার, খাবার স্যালাইন, ডাব, লেবু, ফলের রস, লেবুর রস। তরল জাতীয় খাবার খেলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ডেঙ্গু কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন ডাল, দুধ, ডিম, মুরগির মাংস গরুর মাংস ছোট মাছের ঝোল বেশি বেশি করে খাবারগুলো খেতে হবে।
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর প্লাটিলেট কমে যায়। এজন্য এমন কিছু খাবার খাওয়াতে হবে যেগুলো খাওয়ালে প্লাটিলেট বাড়বে। যেমন সাইটাস্ট ফল, কাঠবাদাম, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, গ্রিন টি, ক্যাপসিকাম, পালং,শাক মসুরের ডাল, পুঁইশাক, রসুন, আদা এই খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে।
ডেঙ্গু হলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারগুলো খেতে হবে যে খাবারগুলোতে ভিটামিন সি রয়েছে যেমন লেবু, আরও বিভিন্ন ধরনের আচার রয়েছে যেগুলোতে ভিটামিন সি থাকে সেই সাথে পেয়ারার শরবত পান করুন। ডেঙ্গুর সংক্রমণের সব থেকে কার্যকরী ওষুধ হলো ভিটামিন সি।
রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে নিম পাতার রস সব থেকে ভালো কাজ করে এটি রক্তের শ্বেত কণিকা বৃদ্ধি পায়। তাই নিমপাতা গুনে গুণের মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই নিম পাতার রস অথবা নিম পাতা বেটে যদি খাবারের সাথে খাওয়া যায় তাহলে ডেঙ্গু তাড়াতাড়ি প্রতিরোধ করা যায়।