দুবাই গার্মেন্টস ভিসা: অনেকেই রয়েছেন যারা বাংলাদেশ থেকে বা বিভিন্ন দেশ থেকে দুবাই গার্মেন্টস ভিসায় কাজ করতে যেতে চান। আজকে আমাদের এই কনটেন্টে আমরা আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব দুবাই গার্মেন্টস ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। এই কনটেন্ট থেকে আপনারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়ে যাবেন। যেমন, দুবাই গার্মেন্টস ভিসা এর বেতন কত, গার্মেন্টসের হিসাব কিভাবে পাবেন, দুবাই গার্মেন্টস ভিসার দাম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
দুবাই হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে জনবহুল বা জনসংখ্যার দিক দিয়ে বড় একটি শহর। দুবাই অবস্থিত পারস্য উপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে। দুবাই শহরটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দুবাইয়ের প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন কাজ করার জন্য যেয়ে থাকেন। যে কারণে অনেকেই দুবাই সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। চলুন জেনে আসি দুবাই সম্পর্কে।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা
দুবাইয়ে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ভিসা নিয়ে বিভিন্ন কাজের জন্য মানুষ গিয়ে থাকেন। অনেকের রয়েছেন দুবাই গিয়ে গার্মেন্টসের কাজ করে থাকেন। দুবাই সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে কাজ করার জন্য শ্রমিক নিয়ে থাকেন। আপনারা সরকারিভাবে বাংলাদেশ থেকে দুবাই যেতে পারবেন। আবার বেসরকারিভাবে ও আপনারা বাংলাদেশ থেকে দুবাই যেতে পারবেন।
দুবাইয়ে অনেক বেশি তেল উৎপাদন হয়ে থাকে যে কারণে দুবাই একটি বড় বণিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দুবাইয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়ে থাকেন। দুবাইয়ে অনেক বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প তৈরি করে থাকেন। প্রচুর হোটেল বড় বড় ক্রিয়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকেন অন্যান্য দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। আর এক্ষেত্রে অনেক শ্রমিক ও নিয়ে থাকেন দুবাই সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা ২০২৩
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ থেকে দুবাই কাজ করার জন্য যেতে পারবেন। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ২০২৩ সালে কিছু নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। আপনি যদি দুবাই যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আন এমপ্লয়মেন্ট ইন্সুরেন্স করতে হবে। তাছাড়া আপনি বাংলাদেশ থেকে ২০২৩ সালে ভিসা নিতে পারবেন না দুবাই যাওয়ার জন্য।
যারা দুবাই রয়েছে বর্তমানে তারা এটা অবশ্যই করে নেবে। তবেআপনি যদি বাংলাদেশ থেকে দুবাই যেতে চান অবশ্যই আপনাকে এটি করতে হবে। এটা ছাড়া আপনি যদি কোন ভাবে দুবাই যেয়ে থাকেন তাহলে আপনার জরিমানা করা হবে। দুবাই সরকার এটা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা বেতন কত
দুবাই গিয়ে একজন শ্রমিক গার্মেন্টস এ কাজ করে প্রতি মাসে আয় করতে পারেন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা এর মত। বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে বেতন কমবেশি হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন কোম্পানির উপর নির্ভর করে ও বেতন কম বেশি হয়। কাজের দক্ষতা এবং কাজের লেভেল এর উপর নির্ভর করে বেতন ভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
দুবাইয়ের প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিভিন্ন রকম কাজ করার জন্য যেয়ে থাকেন। সেখানে গিয়ে তারা বেসিক বেতন প্রতি মাসে উত্তোলন করতে পারেন প্রায় দশ হাজার দিরহাম। তবে কোম্পানি বা কাজ ভেবে সামান্য কম বা বেশি বেতন হতে পারে। আবার সময়ের ওপর নির্ভর করেও বা কত ঘন্টা কাজ করবেন তার ওপর নির্ভর করেও বেতন কমবেশি হয়।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা কিভাবে পাবেন
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা আপনারা সরকারিভাবে পেতে পারেন অথবা এজেন্সির মাধ্যমে ও গার্মেন্টস ভিসা পেতে পারেন। আপনি যদি দুবাই যেতে চান তাহলে আপনি এজেন্সির সাহায্য নিতে পারেন। তবে আপনি যে এজেন্সি সাহায্য নেবেন সেই এজেন্সি সম্পর্কে পূর্বেই বিস্তারিত জেনে নিবেন। অথবা আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ও দুবাই গার্মেন্টস এর কাজ সংগ্রহ করতে পারেন। তারপরে সেখান থেকে আপনাকে ভিসা প্রোভাইড করলে আপনি ভিসা পেয়ে যাবেন।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া আপনি নিজে নিজেই সম্পন্ন করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে অনলাইন এর মাধ্যমে সবকিছুই করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আপনি যদি অনলাইন সম্পর্কে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি খুব সহজেই ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারবেন। আপনি যদি অনলাইনে দক্ষ না হয়ে থাকেন তাহলে আপনি যে কোন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।
আবেদন করার জন্য আপনার বেশ কিছু ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হবে যে সকল ডকুমেন্টগুলো ছাড়া আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। ডকুমেন্ট ছাড়া যদি আপনি আবেদন করেন তাহলে আপনি কখনোই ভিসা পাবেন না। সুতরাং আবেদন করার পূর্বে আপনারা সকল প্রকার ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে রাখবেন।

দুবাই গার্মেন্টস ভিসার দাম কত
দুবাই গার্মেন্টস ভিসার দাম হয়ে থাকে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মতো। অন্যান্য দেশের তুলনায় দুবাই যেতে কম খরচ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এজেন্সি ভেদে সামান্য টাকা কম বা বেশি খরচ হতে পারে। আপনি যদি দালালের মাধ্যমে দুবাই যেতে চান তাহলে আপনার ভিসা খরচ বা যাবতীয় খরচ বেশি লাগবে। সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
দুবাই গার্মেন্টস ভিসার জন্য বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। যে কোন বিষয় ক্ষেত্রেই ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন রয়েছে অনেক বেশি। তেমনি ভাবে দুবাই গার্মেন্টস ভিসার জন্য যে সকল কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
- প্রথমত আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং পাসপোর্টে সর্বনিম্ন ৬ মাস বা তার বেশি মেয়াদ থাকতে হবে।
- পাসপোর্ট দুইটি পৃষ্ঠা বা তার বেশি পৃষ্ঠা ফাঁকা থাকতে হবে।
- এনআইডি কার্ড এর প্রয়োজন হবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- মেডিকেল রিপোর্ট।
- করোনার টিকা কার্ড।
- আপনার বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
এছাড়াও আরও অন্যান্য ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হতে পারে। যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন হতে পারে সেই সকল ডকুমেন্টস গুলো আপনি যে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা সম্পন্ন করবেন বা ভিসা প্রসেস করবেন তারা আপনাকে পূর্বেই জানিয়ে দেবে। সেই মোতাবেক আপনি সকল কাগজপত্র সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।
দুবাই গার্মেন্টস কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
দুবাইয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকেন। দুবাই গার্মেন্টস কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে নিচের টেবিলে উল্লেখ করা হলো।
দুবাই গার্মেন্টস কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি | |
---|---|
পদের নাম: | ম্যাসন |
নিয়োগ সংখ্যা: | ২০০ জন |
মাসিক বেতন: | ৩৭ পার্সেন্ট কমিশন সর্বোচ্চ |
চুক্তির মেয়াদ: | ৩ বছর |
শিক্ষাগত যোগ্যতা: | এসএসসি |
বয়স: | ২৩ থেকে ৪৯ বছর |
কর্ম ঘন্টা: | ১২ ঘন্টা |
দুবাই গার্মেন্টস কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি | |
---|---|
প্রতিষ্ঠানের নাম: | মেসার্স মিআজ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস |
চাকরির ধরন: | বেসরকারি |
প্রার্থীর বয়স: | উল্লেখ নেই |
পদ সংখ্যা: | দুইটি |
নিয়োগ সংখ্যা: | ৪৫০ জন |
আবেদনের মাধ্যম: | ইন্টারভিউ |
দুবাই গার্মেন্টস ভিসায় যাওয়ার এজেন্সি
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা নিয়ে আপনারা বাংলাদেশের বেশ কিছু এজেন্সি থেকে যেতে পারবেন। বুয়েসেলের মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে দুবাই গার্মেন্টস ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। দুবাই গার্মেন্টস ভিসায় যাওয়ার এজেন্সি ঢাকায় অবস্থিত। আপনি এজেন্সি থেকে সরাসরি দুবাই গার্মেন্টস ভিসা যাওয়ার প্রসেস করে নিতে পারেন।
দুবাই গার্মেন্টস কাজে সুযোগ সুবিধা
দুবাই গার্মেন্টস এ কাজ করলে বেশ কয়েক রকম সুযোগ-সুবিধা পেয়ে যাবেন। অবশ্যই কোম্পানি ভেদে ও সুযোগ সুবিধা ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে দুবাইয়ের বেশিরভাগ কোম্পানিতেই বেশ কয়েক রকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো।
থাকা খাওয়ার খরচ কোম্পানি বহন করবেন। আকামা খরচ কোম্পানি বহন করবেন। চিকিৎসা খরচ কোম্পানি বহন করবেন এবং যাতায়াত খরচ বা স্বাস্থ্য বীমা খরচ, পোশাক খরচ ইত্যাদি সকল কিছু কোম্পানি বহন করে থাকেন। এগুলো হল দুবাই গার্মেন্টস কাজ করার সুযোগ সুবিধা। যে সুযোগ সুবিধা গুলো দিয়ে থাকে তা একটি মানুষের জন্য অনেক বেশি। সবকিছুই কোম্পানি বহন করে থাকেন।
দুবাই গার্মেন্টস ভিসা নিয়ে সতর্কতা
ডুবাই গার্মেন্টস ভিসা নিয়ে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ মানুষ বিভিন্ন ভিসা নিয়ে বিভিন্ন কাজের জন্য দুবাই গিয়ে থাকেন। অনেকেই এজেন্সি অথবা সরাসরি দুবাই কোম্পানি থেকে জব সংগ্রহ করে দুবাই যান। যারা এজেন্সি বা দালালদের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দুবাই যাবেন তাদের বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।
বাংলাদেশ অনেক অবৈধ এজেন্সি এবং অনেক দালাল রয়েছে যারা আপনাকে অনেক রকম লোক দেখাবে দুবাই নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আপনার কাছ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা নিয়ে শেষ পর্যন্ত আপনাকে দুবাই পৌঁছাইতে পারবেনা। পরবর্তীতে আপনি আপনার টাকা পুরোটাই লস করবেন। অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা অবৈধ পাসপোর্ট ভিসা দিয়ে আপনাকে বিদেশে পাঠাবে।
কিন্তু পরবর্তীতে এ কারণে আপনি অনেক বড় রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। যে কারণে আপনারা ভিসা করার পূর্বে এজেন্সি সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নেবেন যেন পরবর্তীতে কোন সমস্যা না হয়। আপনি ভিসা পাওয়া মাত্রই আপনি অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই ভিসা চেক করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি নিজে নিজে ভিসা চেক করে নিতে পারেন।
Sopetvisor