আজকে এই কন্টেন্টের মধ্যে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা কত টাকা এবং অন্যান্য তথ্যগুলো জানতে পারবেন। পৃথিবীর ছোট উন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি হল সিঙ্গাপুর। দেশটির স্বাধীনতা 1965 সালে। সিঙ্গাপুর দেশটি অনেক ছোট হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে অপূর্ব । প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটন সিঙ্গাপুরে যায় ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে। সিঙ্গাপুরে ভ্রমণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ যায়। সিঙ্গাপুরে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র আছে যেখানে যাওয়া বাঙ্গালীদের অনেক আগ্রহ আছে।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা প্রসেস
প্রতি বছর হাজারো বাঙালি ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমাই। কারণ ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য সিঙ্গাপুর অনেক আকর্ষণীয় একটি জায়গা। আজকে আমরাই কন্টাক্ট এর মধ্যে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা প্রসেস সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে কিভাবে সেখানে যেতে হয়, সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে। সিঙ্গাপুর উল্লেখযোগ্য কিছু দর্শনীয় স্থান। এবং সেখানে আবেদন করার জন্য কোন কোন ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন সে সম্পর্কে জানব।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে এসকল বিষয় জানতে হবে। আপনি যদি দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে না জানেন তাহলে সেখানে গিয়ে ভালোভাবে ঘুরতে পারবেন না। দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর হোটেল বুকিং খরচ কত সিঙ্গাপুরে টুরিস্ট ভিসায় কত টাকা খরচ হবে এ সকল বিষয় জানা একজন টুরিস্টের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এ সকল বিষয় নিয়ে আজকে আমাদের এই কনটেন্ট।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা কত টাকা
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা পেতে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ চার থেকে ছয় লক্ষ টাকা খরচ করা লাগবে। এছাড়াও যদি কোন ডকুমেন্টসের মধ্যে সমস্যা থাকে তাহলে টাকা বেশি লাগবে। মোটামুটি চার থেকে ছয় লক্ষ টাকার মধ্যে আপনি সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
করোনা পরিস্থিতির পর সবকিছুর দাম যেমন বেড়ে গেছে তেমনি সিঙ্গাপুর ভিসা খরচও কিছুটা বেড়েছে। যদিও আগে এর থেকে অল্প টাকায় সিঙ্গাপুর টুডে ভিসা পাওয়া যেত। তবে দালালের মাধ্যমে চুক্তি করতে গেলে টাকার পরিমান আরো বেশি লাগতে পারে। তাই দালালের মাধ্যমে চুক্তি না করে নিজে নিজে সম্পূর্ণ ভিসা প্রসেস করাটাই ভালো।
সিঙ্গাপুরের দর্শনীয় স্থান
সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে যদি আপনি সেখানকার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে না জানেন তাহলে আপনার ভ্রমণটা যেন স্বাদ হীন হয়ে যাবে। তাই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে সেদেশের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে হবে। সিঙ্গাপুরের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে যে জায়গাগুলো সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য তার তালিকা নিচে দেওয়া হল।
- সিঙ্গাপুর ফ্লাইআর
- মেরিনা বে সেন্ডস
- শাহী ইরানি মাজার শরীফ
- অতীশ দিপস কারের জন্মস্থান
- সেন্ট্রোসা আইল্যান্ড
- চায়না টাউন
- জুডন বার্ড পার্ক
- বোটানিক গার্ডেন
- এসল্যান্ডে পার্ক
- সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা
- মারলায়ন পার্ক
সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করতে চান তাহলে উপরের জায়গাগুলোতে অবশ্যই আপনাকে যেতে হবে। উপরের জায়গাগুলোতে যদি আপনি ভ্রমণ না করেন তাহলে আপনার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ পরিপূর্ণ হবে না। সিঙ্গাপুরের সবচাইতে বেশি সুন্দর জায়গা গুলোর মধ্যে অন্যতম এগুলো।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা কিভাবে আবেদন করবেন
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক। অনলাইন থেকে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার আবেদন সম্পন্ন করা যায়। সকল ডকুমেন্টস সঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই অনলাইনে আবেদন করে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা পাওয়া সম্ভব। এছাড়া সেখানে অবস্থিত পরিচিত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা নিতে পারেন। পরিচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে টুরিস্ট পেশার সংগ্রহ করাটাই সব থেকে বেটার। তবে অনলাইন থেকেও টুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করা যায় সে ক্ষেত্রে ছোট ছোট কিছু ঝামেলা থাকে।
সিঙ্গাপুর ভ্রমণ প্যাকেজ
সিঙ্গাপুর টুর প্যাকেজ | দিন / রাত | টাকার পরিমান |
---|---|---|
সিঙ্গাপুর ফ্লাইআর | ৪/৫ | ৮১,০০০ |
মারলায়ন পার্ক | ৩/৪ | ৭৫,000 |
চায়না টাউন | ৪/৫ | ১০,০০০০ |
বোটানিক গার্ডেন | ৪/৫ | ৯৫,০০০ |
এছাড়াও সিঙ্গাপুর ভ্রমণ প্যাকেজ এর মধ্যে সাপ্তাহিক এবং মাসিক কিছু প্যাকেজ রয়েছে। সাপ্তাহিক এবং মাসিক প্যাকেজ গুলোর জন্য খরচ একটু বেশি হয়। মাসিক প্যাকেজে 2 লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। আপনি কেমন বিলাসবহুল ভ্রমণ করবেন সেটার উপর নির্ভর করবে আপনার ভ্রমণ প্যাকেজের খরচ। আপনি যদি নরমাল হোটেলে থেকে ভ্রমণ করেন সেক্ষেত্রে আপনার ভ্রমন খরচ কিছুটা কম হবে।
সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসার দাম কত
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার দাম বর্তমানে চার থেকে ছয় লক্ষ টাকা। সকল কার্যক্রম করার জন্য মোটামুটি চার থেকে ছয় লক্ষ টাকার মধ্যেই হয়ে যায়। তবে অনেকেই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা করার জন্য কিছু দালাল চক্রের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসার জন্য যখন কেউ দালাল চক্রের সাথে চুক্তি করে তখন তাদের জন্য খরচটা অনেক বেশি হয়ে যায়।
দালাল চক্রের সাথে চুক্তি করার জন্য অনেকের ভিসা আসে না এবং ভিসা এর সমস্যা দেখা দেয়। তাই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার জন্য কখনোই দালাল চক্রের সাথে যোগাযোগ করবেন না। সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক। সম্পূর্ণ অনলাইনে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার আবেদন সম্পন্ন করতে। তাই দালাল চক্রের সাথে হাত করার কোন প্রয়োজন নেই। সকল কাজে অনলাইনের মাধ্যমে করলে মোটামুটি চার থেকে ছয় লক্ষ টাকার মধ্যে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার সম্ভব।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় কি কি করতে পারবেন
সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে কখনোই আপনি কখনোই পারমিট ভিসার কাজ করতে পারবেন না। যদিও অনেক দেশের কেউ আর পারমিট কাজ করা যায়। আপনি সর্বোচ্চ সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে সেখান থেকে অন্য কোন ভেসে চলে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আইএলটিএস স্কোর ভালো থাকতে হবে। সেই সাথে থাকতে হবে এজেন্সির সাথে অনেক ভাল ধরনের সম্পর্ক।
আপনি মন প্রাণ খুলে সিঙ্গাপুরের সকল জায়গায় ইচ্ছা মতো ঘটতে পারবেন। তবে কোনভাবে কোন অনৈতিক কাজ করার জন্য ভুলেও ভাববেন না। কারণ সিঙ্গাপুরের আইন ব্যাপকভাবে শক্তিশালী। সিঙ্গাপুরে আপনি প্রতিটা রাজ্যে যেতে পারবেন। সিঙ্গাপুর দেশটি কিন্তু অনেক ছোট । বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামের সাত ভাগের এক ভাগের সমান সিঙ্গাপুর। তাই সিঙ্গাপুরের প্রতিটি শহর ঘুরতে খুব একটা বেশি দিন সময় লাগবে না।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনে কিছু কাগজপত্রের দরকার হয়। এ সকল কাগজ পাতি ছাড়া কখনোই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় আবেদন করা যায় না। এছাড়াও কোন কাগজপত্র যদি সমস্যা থাকে তাহলে আবেদন বাতিল হয়। কিসের জন্য কোন কাগজপত্র গুলো সব থেকে বেশি জরুরী সেগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
- এক বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ একটি বৈধ পাসপোর্ট
- একটি সচল ব্যাংকের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- আপনি যদি সরকারি কর্মকর্তা হয়ে থাকেন তাহলে আপনার অফিস থেকে একটি চিঠির প্রয়োজন হবে
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে. ছবি অবশ্যই তিন মাসের বেশি পুরনো হওয়া যাবে না।
- সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় আবেদনের মূল কপি লাগবে
- অবশ্যই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দরকার হবে। অনেকেই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে সে দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। যার প্রধান কারণ হলো দেশে কোন দুর্নীতি। তাই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা যেতে হলে অবশ্যই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দরকার।
- কোভিড 19 ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট লাগবে
টুরিস্ট ভিসা আবেদন করার জন্য উপরে ডকুমেন্টস গুলোই সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও কিছু ডকুমেন্ট লাগতে পারে যেগুলো আপনারা অফিস থেকে জেনে নিতে পারবেন। অবশ্যই তাদের চাহিদার মত সকল ডকুমেন্টস দিতে হবে। নতুবা আপনার ভিসা তাড়াতাড়ি পাবেন না।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সতর্কতা
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা করার জন্য কখনোই আপনারা দালালের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবেন না। দালালের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলে আপনারা বেশিরভাগ সময় প্রতারিত হবেন। এছাড়াও চুক্তি করার পর কখনোই ভিসা পাবার আগে টাকা পরিশোধ করবেন না। এতে করে প্রতারণার ঝুঁকিটা আরো বেশি হয়ে যায়।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় সেখানে গিয়ে কোন ধরনের দুর্নীতি করার চেষ্টা ওকেকরবেন না। কারণ সিঙ্গাপুর দেশটি বাংলাদেশের মত নয়। সেখানে জিরো টলারেন্স চলে। বুঝতে পারছেন সেখানে আইন কতটা শক্তিশালী। এবং সকল মানুষ আইনের প্রতি ব্যাপকভাবে শ্রদ্ধাশীল। তাই সিঙ্গাপুরে গিয়ে কোনভাবেই কোন ধরনের দুর্নীতি করার চেষ্টা করবেন না।
সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় আবেদনের সময় কোন ডকুমেন্টস জালিয়াতি করার চেষ্টা করবেন না। এতে করে আপনি কালো তালিকায় চলে যাবেন। আপনি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে আর কোন দেশে টুরিস্ট ভিসা যেতে পারবেন না। এবং টুরিস্ট ভিসা সম্পন্ন করার জন্য আপনি যে টাকা জমা দিবেন সেটাও আর ফেরত পাবেন না। তাই সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসারের কাগজপত্র কখনো ভাবেই নকল দেওয়া যাবে না।