আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, ওমানের টুরিস্ট ভিসা নিতে গেলে আপনাকে প্রথমেই ওমান দেশটি সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা আপনি যে দেশে টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে ভ্রমণ করতে চান সে দেশ সম্পর্কে যদি আপনার সাধারণ অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে করে ওমানের টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে আপনি কিছুই করতে পারবেন না।
আরব দেশগুলোর অন্যতম একটি দেশ হলো ওমান, দেশটির পারস্য তীরে অবস্থিত। এ দেশটির প্রচুর ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। এদেশের মূল আয়ের এক বড় অংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। কারণ ইসলামের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি দেখার জন্য এশিয়া মহাদেশ থেকে প্রতিবছর হাজারো মানুষ এ দেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে থাকে।
ওমান টুরিস্ট ভিসা ২০২৩
আমার টুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে বেশ কিছু নতুন আপডেট এসেছে, ২০২৩ সালে। কারণ আরবের এই দেশটিতে প্রতিবছর অনেক মানুষ টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সেখানে গিয়ে নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ে। তাই ২০২৩ সালে এসে ওমান সরকার বেশ কিছু নতুন নিয়ম তৈরি করেছে যার মাধ্যমে একজন টুরিস্ট কখনোই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার কাজ করতে পারবেন না।
আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন এবং পৃথিবীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার আপনার মধ্যে কৌতুহল জাগ্রত হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই ওমানে যেতে হবে। ওমান টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে আপনি খুব সহজেই ইসলামের ঐতিহ্য সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। প্রতিবছর শুধু এশিয়া মহাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ ওমান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে থাকে।
ওমান টুরিস্ট ভিসা কত টাকা
ওমান টুরিস্ট ভিসার মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, বর্তমানে একজন নাগরিকের ওমান টুরিস্ট ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা খরচ হবে। যদিও পূর্বে ৫০০০০ টাকার মধ্যে একজন নাগরিকের ওমান টুরিস্ট ভিসা প্রসেস সম্পূর্ণ হয়ে যেত। তবে বহির্বিশ্বের এয়ারলাইন্স গুলোর ভাড়া বাড়ার সাথে সাথে ওমান টুরিস্ট ভিসার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আপনি যদি ফ্যামিলি নিয়ে যেতে চান সে ক্ষেত্রে সবকিছু মিলিয়ে খরচ একটু কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওমানের টুরিস্ট অফিসে গেলে একা না যাওয়াই সবথেকে ভালো। কারণ আপনি যদি ওমানে টুরিস্ট ভিসায় একা যান তাহলে খরচ অনেকটাই বেশি হবে।
ওমান টুরিস্ট ভিসা কিভাবে করবেন
ওমান টুরিস্ট ভিসা আপনি বাংলাদেশের যে কোন এজেন্সি থেকে করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আমাদের সাজেশন থাকবে যে আপনি বাংলাদেশবুয়েসেল অনুমোদিত যে এজেন্সি সেগুলো রয়েছে সেগুলো থেকে আবেদন করলে সব থেকে বেশি ভালো হয়। কারণ বয়েসেল নিবন্ধিত এজেন্সিগুলো মাধ্যমে আবেদন করলে প্রতারণার ঝুঁকিটা একটু কম থাকে। এবং অল্প সময় কম খরচের মধ্যে আপনি খুব সহজেই ওমান টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে টুরিস্ট ভিসা আবেদনের জন্য আপনি যদি দেশের বাহিরেও থাকেন এর পরও দেশীয় যে কোন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে আপনি আবেদন করতে পারবেন।
ওমান টুরিস্ট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইনে টুরিস্ট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে একজন প্রবাসীর জানাটা জরুরী। কারণ দেশের মধ্যে হাজারো প্রতারক চক্র এ সকল প্রবাসীদের নিয়ে নানা রকম ফাঁদ পেতে বসে থাকে। ওমান টুরিস্ট ভিসা আবেদন অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই করা যায়। আপনি যদি দেশের বাইরে এবং এজেন্সিতে সরাসরি যাওয়া সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইন থেকে খুব সহজে ঘরে বসেই ওমান টুরিস্ট ভিসা আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার যাবতীয় তথ্য দিয়ে ভিসা আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে ভিসা আবেদন ফরম এর যদি কোন ভুল থাকে তাহলে আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে। এছাড়াও আবেদন করার সময় যে ফ্রি নেয়া হয় সেটাও আর ফেরত দেওয়া হবে না।
অনলাইনে আবেদন করতে যদি আপনার সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি বাংলাদেশের যে কোন এজেন্সিতে গিয়েই ওমান টুরিস্ট বেশি আবেদন করে নিতে পারবেন। এজেন্সিতে দেওয়া রিক্রুটমেন্ট গুলো অনুযায়ী আপনার সকল ডকুমেন্ট সেখানে জমা দিতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপনি অপেক্ষা করবেন এবং খুব শীঘ্রই আপনি ওমান টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন। কারণ বাংলাদেশ থেকে ওমান টুরিস্ট ভিসা পেতে অতিরিক্ত কোন ঝামেলার প্রয়োজন হয় না।
ওমান টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদ সম্পূর্ণ একটি বৈধ পাসপোর্ট
- ভিসা আবেদন ফরম
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- ভ্রমণের বিস্তারিত অনুলিপি প্রকাশিত করতে হবে
- হোটেল রিসিপশন এবং এয়ার টিকিটের নথি দেখাতে হবে
- একটি বৈধ ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে
- ক্রস লাইন সহ একটি পৃষ্ঠা চেক প্রয়োজন হবে
- সঙ্গে যদি কোন নাবালক থাকে সেক্ষেত্রে জন্ম সনদের ফটোকপি প্রয়োজন হবে
ওমান টুরিস্ট ভিসা খরচ
ওমান টুরিস্ট অফিসে গিয়ে আপনি কত টাকা খরচ করবেন সেটা অন্য কেউ বলে দিতে পারবে না। কারণ ওমান টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে খরচের বিষয়টা পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনার নিজের উপর। সেখানে গিয়ে আপনি কতদিন থাকবেন এবং কেমন জীবন যাপন করে ভ্রমণ করতে চান সেটাই মূলত আপনার ভিসা খরচ। মনে করি আপনি ফ্যামিলি নিয়ে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনার যে ধরনের খরচ হবে আপনি একা গেলে কিন্তু সেই ধরনের খরচ হবে না। আবার ওমানে গিয়ে আপনি যদি বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন সে ক্ষেত্রে অধিক টাকা খরচ হবে। কিন্তু যদি সাধারণভাবে সেখানে ভ্রমণ করেন তাহলে অল্প টাকার মধ্যে ওমান দেশটি ভ্রমন করে আসতে পারবেন।
ওমান টুরিস্ট ভিসার বয়স কত লাগে
ওমানের টুরিস্ট ভিসায় যাবার জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়সের প্রয়োজন নেই। আপনি যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য যে রিকোয়েন্টমেন্ট গুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো প্রদান করতে হবে। অনেকেই মনে করে থাকেন ১৮ বছরের নিচে কেউ ওমান টুরিস্ট ভিসায় যেতে পারে না। আসলে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের জন্যও মনে একটু বিষয় যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে তাদেরকে বিশেষ কিছু রিকোয়ারমেন্ট প্রদান করতে হয়। যে রিক্রুটমেন্টগুলো প্রদান করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ওমান টুরিস্ট ভিসায় যেতে পারবেন।
ওমানের ভিজিট ভিসা ৩মাসের মূল্য
ওমানে তিন মাসের জন্য ভিজিট ভিসা নিতে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ গুনতে হবে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তবে আপনি যদি একসঙ্গে পুরো ফ্যামিলির জন্য ভিজিট ভিসা নিয়েন তাহলে খরচ অনেকটাই কম হবে। তাই সর্বোপরি চেষ্টা করবেন একজনের জন্য ভিজিট ভিসা না নিয়ে কয়েকজন একসঙ্গে ওমান ভিজিট ভিসা নেওয়ার। এছাড়াও ভিজিট ভিসা নেওয়ার জন্য অনেকেই তৃতীয় কোন পক্ষের সাথে চুক্তি করে থাকে, ফলে তাদের অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন হয়। ওমান ভিজিট ভিসা নিতে হলে আপনি বাংলাদেশের যে কোন এজেন্সি থেকে তার সংগ্রহ করতে পারবেন। তাই তৃতীয় কোন পক্ষের সাথে জড়িত না হয় সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
ওমানের টুরিস্ট ভিসায় কি কাজ করা যায়
ওমান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে কি সেখানে গিয়ে কাজ করা যায়? প্রশ্নের উত্তরে খুব শক্তভাবে বলা যায় যে আপনি কখনোই ওমান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সেখানে গিয়ে কাজ করতে পারবেন না। আমাদের অফিসে অনেক মানুষ এসে বলে স্যার ওমানের টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে অনেকেই কাজ করছে তাহলে আপনারা কেন বলেন টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে কাজ করা যাবে না। বিষয়টি শুনে সত্যিই আমরা হতভম্ব হই।
কারণ দেশেও অনেক দালাল এবং প্রতারক চক্র গুলো অনেক মানুষকে অল্প টাকায় ভিসা দেওয়ার জন্য টুরিস্ট ভিসা প্রয়োগ করে কিন্তু তাদের সাথে চুক্তি হয় ওয়ার্ক পারমিট ভিসার। এ ধরনের দালাল চক্রের সাথে আপনি চুক্তি করলে প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ। তাই ধরনের দালাল ও প্রতারক চক্র সাথে কখনোই অর্থের কোন যুক্তি করতে যাবেন না। সর্বোপরি আপনাকে মনে রাখতে হবে ওমানে টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে আপনি কখনোই কাজ করতে পারবেন না।
ওমান টুরিস্ট ভিসায় কতদিন থাকতে পারবেন
ওমানে টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে আপনি সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন। কিন্তু কতদিন অবস্থান করবেন সেটি আপনার ভিসা নেওয়ার সময় উল্লেখিত করা থাকবে। তবে আপনি যদি মাত্র ১০ দিনের ভিসা নিয়ে সেখানে গিয়ে অনেক দিন ভ্রমণ করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই দোষী সাব্যস্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে আপনি যদি মনে করেন টুরিস্ট ভিসাই গিয়ে সাত দিন থাকবেন তাহলে সাত দিনের জন্য ভিসা করবেন। তবে যদি অতিরিক্ত সময় থাকতে চান তাহলে সময় উল্লেখ করে ভিসা করবেন।
ওমান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সতর্কতা
পরিশেষে আপনি যে দেশের টুরিস্ট ভিসা পেতে যাচ্ছেন সে দেশ সম্পর্কে একটু সতর্কমূলক কথা বলতে চাই, আপনি যখন টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সেখানে পৌঁছাবেন মাথায় রাখতে হবে আপনি কোন স্পটগুলোতে ভ্রমণ করবেন। আপনার ভ্রমণের স্পটগুলো যদি আগে থেকেই নির্দিষ্ট না থাকে তাহলে ভ্রমণ করে স্বস্তি মিলবে না। অপরদিকে অনেকেই টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজ দেয়ার কথা বলে থাকে, এ ধরনের দালাল ও প্রতারক চক্র থেকে সাবধান থাকবেন।
আলবেনিয়া টুরিস্ট ভিসা-আলবেনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ( আবেদন প্রক্রিয়া )